ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বহিষ্কার দাবিতে উত্তাল চবি ক্যাম্পাস
চবি প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়(চবি) রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে অধ্যাপক ড. মাহবুলুল মতিনকে স্থায়ী বহিষ্কারসহ দৃষ্টান্তলূক শাস্তির দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন করছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে নানা স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে অবস্থান করে।
আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষর্থীরা স্লোগান দিচ্ছে; জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে, রসায়নের আঙিনায় মতীনের ঠাঁই নাই, আমার বোনের সম্মান হানি মানি না মান বোনা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে আন্দোলন করতে দেখা যায়।
এই ব্যাপারে ২০১৯-২০২০ সেশনের শিক্ষার্থী রুম্পা খাতুন বলেন,এই আন্দোলনে আমাদের প্রধান দুটি দাবি হচ্ছে, ধর্ষক মাহবুবুল মতিনকে ক্যাম্পাস থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভুক্তভোগীর বাদি হয়ে ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে।
রসায়ন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মুনিরা সুলতানা চৌধুরী বলেন, আমরা এটা বুঝি না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন এত বড় অপরাধের অভিযোগ পেয়েও সুষ্ঠু তদন্তে নামছে না। যদি এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ধরনের গাফিলতি করে তাহলে আমাদের আন্দোলন
চলমান থাকবে।
২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আল জিয়ন বলেন, আমরা প্রশাসন থেকে আমাদের দাবি মোতাবেক কোন সিদ্ধান্ত পাচ্ছি না। আমাদের দাবি অনুযায়ী প্রশাসন শাস্তি না দিলে আমাদের আন্দোলন আরও দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাব।
এই ব্যাপারে বিশ্ববদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. নূরুল আজিম শিকদার থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরাও চাই ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তুি হোক কিন্তু শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সাথে সাথে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আসতে পাঁচ সাত দিন লাগতে পারে। রিপোর্ট অনুযায়ী আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। একটা মানুষের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত শাস্তি দিতে পারি না। অভিযুক্তের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে আমরা তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দিব।
উল্লেখ্য, গত বুধবার ৩১জানুয়ারি দুপুরে উপাচার্য শিরীণ আখতারের কাছে এক শিক্ষার্থী নিজ বিভাগের এক অধ্যাপক সম্পর্কে লিখিতভাবে যৌন হয়রানি, যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেন। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্ত না আসায় সেই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যাপক অভিযোগটি অস্বীকার করেন।তিনি বলেছেন যে তাঁকে ফাসানো হয়েছে। শিক্ষকতার ক্যারিয়ারে তাঁর এমন কোনো খারাপ রিপোর্ট নেই।