‘ব্যাট’ ছাড়াই সেঞ্চুরি করলেন ক্যাপ্টেন

‘ব্যাট’ ছাড়াই সেঞ্চুরি করলেন ক্যাপ্টেন

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের ফল অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদের ২৬৪টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরপরই পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৩টি আসনে, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪ ও মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম) ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১৭টি আসন। দেশটির ইতিহাসে প্রথমবার জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ মিলিয়ে এবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তিন শতাধিক আসনে জয়লাভ করেছে।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) শনিবার পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফল অনুসারে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়ে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে অনেক বেশি আসন জিতেছে।

শনিবার পর্যন্ত পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের 'ফর্ম ৪৭' বিধিমালা অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদের ২৬৪টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরপরই পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৩টি আসনে, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪ ও মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম) ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১৭টি আসন।

দেশটির ইতিহাসে প্রথমবার জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ মিলিয়ে এবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তিন শতাধিক আসনে জয়লাভ করেছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সর্বাধিক আসন জয়লাভ করার পাশাপাশি পাঞ্জাব প্রদেশে বড় সংখ্যক প্রাদেশিক আসনে জয় তুলে নিয়েছে পিটিআই-সমর্থিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। 

পিটিআই বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি, এমনকি তাদের ক্রিকেট ব্যাট প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়। তাই দলটির সদস্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

গত শনিবার পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের 'ফর্ম-৪৭' ঘোষণা অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদের ২৫৫ আসনের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় পরিষদের একটি আসন এবং প্রাদেশিক পরিষদের তিনটি আসনের নির্বাচন স্থগিত রয়েছে প্রার্থীদের মৃত্যুর কারণে।

এছাড়া, জাতীয় পরিষদের একটি আসন এবং প্রাদেশিক পরিষদের দুটি আসনে পুনর্নির্বাচন হবে। 

আর জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম (জেইউআই) এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ -কায়েদ (পিএমএল-কিউ) তিনটি আসন পায়, ইস্তেকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি) দুটি, গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (জিডিএ) একটি এবং মজলিস-ই-ওয়াহদাত-ই-মুসলিমিন পাকিস্তান (এমডব্লিউএমপি) একটি আসন পায়।

প্রাদেশিক পরিষদসমূহ

ফলাফল অনুযায়ী, পাঞ্জাব বিধানসভার ২৯৫টি আসনের মধ্যে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র ও পিএমএল-এন উভয়ই ১৩৭টি করে আসন জিতেছে; এরপরে পিপিপি ১০টি; পিএমএল-কিউ ৭টি এবং তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান, আইপিপি ও পিএমএল-জেড একটি করে আসন জিতেছে।

খাইবার-পাখতুনখোয়ায় ৪৪টি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের ৪৪টি আসনের মধ্যে ৩৭টি এবং ১১৫টি প্রাদেশিক পরিষদের মধ্যে ৮৬টি আসনে জয়লাভ করে।

জাতীয় পরিষদে জেইউআই ও পিএমএল-এন এর চেয়ে দুটি করে আসন কম পেয়েছে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। 

একটি করে আসন পেয়েছে এমডব্লিউএমপি, পিপিপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী।

চিত্রল, সোয়াত, আপার দির, লোয়ার দির, মালাকান্দ, বোনার, বাট্টগ্রাম, মানসেহরা, অ্যাবোটাবাদ, সোয়াবি, মর্দান, চারসাদ্দা, নওশেরা, খাইবার, মোহমান্দ, কোহাত, হাঙ্গু, ওরাকজাই, কারাক, বান্নু, লাক্কি মারওয়াত, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান, ট্যাংক এবং অন্যান্য জেলায় বিরোধীদের পরাজিত করেছে স্বতন্ত্ররা।

পিএমএল-এন শাংলা ও মানসেহরা জেলায় দুটি আসন পেয়েছে এবং জেআইআই-এফ পেশোয়ার ও উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলা থেকে দুটি আসন পেয়েছে।

এমডব্লিউএমপি কুররামে এবং পিপিপি ডেরা ইসমাইল খানে জিতেছে। কোহিস্তান জেলা থেকে নিজের আসনে জয়ী হয়েছেন এই স্বতন্ত্র প্রার্থী।

১১২টি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্ররা পেয়েছে ৮৬টি আসন। 

জেইউআই-এফ ৭টি; পিএমএল-এন৫টি; পিপিপি ৪টি; জামায়াতে ইসলামী (জেআই), ৩টি; পিটিআই-সংসদ সদস্য ২টি; আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি), ১টি এবং পিটিআই বহির্ভূত ৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতেছেন।

পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পরাজিত করা চার নির্দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন: মালিক তরিক আওয়ান পেশোয়ারে কামরান বাঙ্গাশকে, কোহিস্তান বালা ফজল হক তেহমিনা ফাহিমকে, কোলাইতে মুমিনা বাসিতকে এবং লাক্কি মারওয়াতে হিশাম ইনামুল্লাহ নূর সেলিম মালিককে পরাজিত করেন।

সিন্ধু বিধানসভায় পিপিপি ১২৯টি আসনের মধ্যে ৮৪টি, এমকিউএম-পি ২৮টি, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৩টি এবং জিডিএ ও জেআই প্রত্যেকে দুটি করে আসন পেয়েছে।

বেলুচিস্তানের ৪৮টি আসনের ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, পিপিপি ১১টি, পিএমএল-এন ও জেআইআই ৯টি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ছয়টি আসন পেয়েছে।

বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি) পেয়েছে ৪টি আসন, এএনপি পেয়েছে ২টি আসন এবং একটি করে আসন পেয়েছে বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি-আওয়ামী (বিএনপি-এ), ন্যাশনাল পার্টি (এনপি) ও জেআই।

ইসিপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় ও প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচনে ১২ কোটি ৮০ লাখের বেশি নিবন্ধিত ভোটারের ভোট দেওয়ার কথা ছিল। জাতীয় পরিষদের ২৬৫টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

বেলুচিস্তান অ্যাসেম্বলির ৫১টি আসন, কেপি অ্যাসেম্বলির ১৩০টি আসনের মধ্যে ১২৮টি, পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির ২৯৭টি আসনের মধ্যে ২৯৬টি এবং সিন্ধু অ্যাসেম্বলির ১৩০টি আসনেও ভোট হয়।

ইসিপি নির্দিষ্ট কারণে এনএ-৮৮, পিএস-৮ এবং পিকে-৯০ এর ফলাফল স্থগিত করেছে, সেখানে ১৫ ফেব্রুয়ারি পুনঃনির্বাচন হবে। 

ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ৯টি আসন, পাঞ্জাব বিধানসভার একটি এবং বেলুচিস্তান বিধানসভার ৩টি আসনের ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায় ছিল।

ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন নেটওয়ার্কের (ফাফেন) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনে প্রায় ৬ কোটি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন এবং ১১ লাখেরও বেশি কর্মকর্তা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন। 

দেশজুড়ে সাত লাখের বেশি পুলিশ ও সামরিক কর্মকর্তা পাহারায় রয়েছেন বলেও জানিয়েছে তারা।

ফর্ম ৪৭ কি?

একটি আসনে বাতিল হওয়া ভোটের পাশাপাশি বেসরকারি হিসাবে প্রার্থীরা কে কত ভোট পেল তা লিপিবদ্ধ থাকে 'ফর্ম ৪৭'- এ। ভোটের দিনই রিটার্নিং কর্মকর্তা ওই আসনের প্রার্থীদের এটি দিয়ে দেন।

Sourse: tbsnews.net