সর্দি-কাশির সমস্যায় উপকারী যেসব ঘরোয়া খাবার

সর্দি-কাশির সমস্যায় উপকারী যেসব ঘরোয়া খাবার

শীতকাল শেষে বসন্তের আগমন ঘটেছে প্রকৃতিতে। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে বাতাসে ফুলের রেণু ভেসে বেড়ায়, শুষ্ক আবহাওয়ায় ঝড়া শুকনো পাতা আর ধুলোবালি বেশি থাকে। যে কারণে এ সময় সর্দি-কাশির সমস্যা বাড়তে থাকে। এ ছাড়া ভাইরাস ও বিভিন্ন অনুজীব সক্রিয় থাকে ঋতু পরিবর্তনের সময়।

যেহেতু এই সময়ে এগুলো বেশি সক্রিয় থাকে তাই যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের হাঁচি, কাশি, শরীরে ব্যথাসহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সর্দি-কাশির সমস্যায় ঘরোয়া কোন কোন খাবার ও পানীয় উপকারী জেনে নিন পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন নিশির কাছ থেকে।

সর্দি-কাশির সমস্যায় ঘরোয়া খাবার 

পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন বলেন, সর্দি-কাশির সমস্যা সমাধানে ঘরোয়া কিছু খাবার অবশ্যই বেশ উপকারী। যেমন-

  • এ সময় সরিষা বা কালোজিরা রাখা যেতে পারে খাদ্যতালিকায়।
  • সরিষার তেল দিয়ে আলু ভর্তা, টমেটো ভর্তাসহ বিভিন্ন ধরনের ভর্তা তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে সর্দি-কাশি উপশমের জন্য। কালোজিরা ভর্তা বেশ উপকারী। এটি ঠান্ডা-কাশিসহ নানা রোগ থেকে মুক্তির মাধ্যমে শরীরকে ভালো রাখে।
  • সরিষা শাক, সরিষা ভর্তাও বেশ উপকারী। এটি ফুসফুসের স্বাভাবিক কাজ করতে সাহায্য করে। নাক বন্ধ, খুসখুসে কাশি এ ধরনের সমস্যা এ সময় বেশি দেখা যায়। সরিষার যেকোনো খাবার খাদ্যতালিকায় থাকলে নাক বন্ধ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  •  নাক ও ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে ভিটামিন এ,  ভিটামিন সি। সেক্ষেত্রে মিষ্টি কুমড়ার বিচি, মিষ্টি আলুর তৈরি বিভিন্ন খাবার খেলে সর্দি-কাশি নির্মূল হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
  • রসুন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। রসুন মুড়ির সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ঘরোয়া পদ্ধতিতে বিভিন্ন খাবারে রসুন দেওয়া যেতে পারে।
  • সর্দি-কাশির জন্য তুলসি পাতা কার্যকরী। সকালে ঘুম থেকে উঠে  তুলসি পাতার রস খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়, বিশেষত বাচ্চাদের। বড়রা তুলসী পাতার চা বা তুলসি পাতা সালাদের সঙ্গেও মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • শীতকালে বা শীতের শেষেও বাজারে যেসব ফল পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন অনুজীবের আক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতেও সাহায্য করে। এ সময় কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, টক জাতীয় ফল খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। 
  • বাজারে মৌসুমি যেসব সবজি পাওয়া যাবে সেগুলো দিয়ে স্যুপ তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। সবজির সঙ্গে মুরগির মাংস বা ডিম মিশিয়ে আদা, রসুনসহ রান্না করে খাওয়া বেশ উপকারী। এটি ইমিউনিটি বাড়ায় এবং সর্দি-কাশির সমস্যায় কাজে আসে।

সর্দি-কাশির সমস্যায় ঘরোয়া পানীয়

হাঁচি-কাশির সমস্যা বিশেষত সকালে ঘুম থেকে উঠলে বেশি দেখা যায় অনেকের। খুসখুসে কাশি বা ঘন কফ হয়ে সমস্যা হতে পারে। এ সময় কিছু ঘরোয়া পানীয় নেওয়া যেতে পারে-

  • সর্দি-কাশির সঙ্গে যাদের শরীরে ব্যথা থাকে তাদের ক্ষেত্রে আদা পানি খুব ভালো কাজ করে। আদা চা সর্দি-কাশির জন্য উপকারী। যাদের সর্দি-কাশির সমস্যা হচ্ছে, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়ছে তাদের জন্য দুধ চা, কফির পরিবর্তে আদার রস বা আদা চা খুব ভালো কাজ করবে।
  • যাদের ঠান্ডার সমস্যা আছে তাদের যদি অ্যাসিডিটির সমস্যা না থাকে বা না হয় তাহলে তারা সকালে ঘুম থেকে উঠে কুসুম গরম পানির সঙ্গে লেবু ও মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি ইমিউনিটি বাড়াবে এবং কফ ও ঠান্ডার প্রবণতা অনেকটা কমিয়ে দেবে।
  • মশলা চায়ের সঙ্গে পুদিনা পাতা মিশিয়ে খেতে পারেন।

পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন বলেন, এ সময়টায় যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করতে হবে, কুসুম গরম পানি হলে বেশি ভালো। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। বাইরে বাতাসে অযথা ঘুরাঘুরি না করে সাবধানে ঘরে থাকাই ভালো।Source: bangla.thedailystar.net