সংবিধান সংশোধন নাকি পুনর্লিখন

সংবিধান সংশোধন নাকি পুনর্লিখন

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) এর আইন অনুষদের উদ্যোগে আজ “সংবিধান সংশোধন নাকি পুনর্লিখন?” শীর্ষক এক মুক্ত আলোচনা ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।  আইআইইউসি ক্যাম্পাসের সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামের সেমিনার হলে আয়োজিত আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানে  বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন, যা এই আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত ও অর্থবহ করে তোলে।এই আয়োজনের মাধ্যমে সংবিধান নিয়ে নতুন প্রজন্মের মাঝে চিন্তাভাবনা ও আলোচনা জোরদার হয়। 

অনুষ্ঠানে আইন অনুষদের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ বলেন "সংবিধান একটি দেশের জনগণের সর্বোচ্চ আইন, যা পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য সংশোধন প্রয়োজন হতে পারে, তবে পুনর্লিখনের প্রয়োজন অত্যন্ত সংকটময় সময়ে দেখা দেয়।“ এছারাও তারা শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং সংবিধান সংশোধন ও পুনর্লিখনের প্রাসঙ্গিকতা, প্রয়োজনীয়তা ও আইনগত দিকগুলো নিয়ে কথা বলেন ও এর বাস্তব প্রয়োগের উপরও আলোকপাত করেন যা শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তি ও বুদ্ধিমত্তাকে আরও সমৃদ্ধ করে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইআইইউসির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. আলী আজাদী। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইন অনুষদের উপদেষ্টা প্রফেসর মোর্শেদ মাহমুদ খান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আইন বিভাগের নব নিযুক্ত চেয়ারম্যান ড. সাইফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, “সংবিধান একটি জাতির জীবনধারার প্রতিফলন ও একটি জীবন্ত দলিল, যা সময়ের সাথে পরিবর্তন হতে পারে, তবে এর মূল চেতনা ও মূল্যবোধ অপরিবর্তনীয় থাকা উচিত।” তিনি আরও বলেন, "আইন শিক্ষার মানোন্নয়নে সংবিধান বিষয়ে গবেষণার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ানো প্রয়োজন, যা তাদের ভবিষ্যতে দক্ষ আইনজ্ঞ হতে সহায়তা করবে।" তিনি আরও ইনোভেটিভ প্রোগ্রামের গুরুত্বের উপর জোর দেন যা শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে সহায়ক হবে।

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে সংবিধান সংশোধন ও পুনর্লিখন বিষয়ে একটি মুক্ত বক্তব্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় এডজুডিকেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর আব্দুল মালেক, সাবেক চেয়ারম্যান রিদওয়ান গনি, সাবেক এলএলএম কোঅর্ডিনেটর কলিম উল্লাহ, বর্তমান এলএলএম কোঅর্ডিনেটর মহিউদ্দিন মহিম, এবং আইন বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ খাব্বাব তাকী ও সামিউল হাসান। পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন অত্র অনুষদের সহকারী অধ্যাপক অঞ্জুমন আরা বেগম, সহকারী অধ্যাপক ফইজুন্নেছা তরু, নুসরাত জাহান, তাসনিম মোস্তফা ও সিজিইডির সহকারী অধ্যাপক নুরুল আবছার। 

মুক্ত বক্তব্য প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মিজবাহ উদ্দিন জিহান, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন আল রাজি, এবং তৃতীয় স্থান লাভ করেন ফাহাদুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে বক্তারা শিক্ষার্থীদের সংবিধান বিষয়ে আরও গবেষণার ও ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনীমূলক প্রোগ্রাম আয়োজনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ধরনের মুক্ত আলোচনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিচারিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সংবিধান বিষয়ে গভীর ভাবনা ও আলোচনা তৈরির সুযোগ করে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে তাদের আইনচর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আশা প্রকাশ করেন যে, এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং আইনের বিভিন্ন জটিল বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আরো সমৃদ্ধ হবে।


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি