ফ্রিল্যান্সারদের প্রশিক্ষণে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প
নতুন সরকারের অধীনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) প্রথম সভায় তোলা হবে দেশের ফ্রিল্যান্সারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রকল্পসহ ৮২৯ কোটি টাকার দুই প্রকল্প।
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য প্রকল্পটিতে ৩০০ কোটি টাকা খরচ হবে। এটি বাস্তবায়ন করবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। এর লক্ষ্য হবে ৪৮ জেলায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা বাড়ানো।
আজ মঙ্গলবার একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য তোলা হবে।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে—শিক্ষিত যুবকদের কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, ফ্রিল্যান্সিং, বেসিক ইংরেজি ও ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
তাদের ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ডলার আয়ের যোগ্য করে তোলাই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
আগামী তিন বছরে ২৮ হাজার ৮০০ জনকে এ ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও পাঠদান বিভাগ অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের (ওআইআই) এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইন শ্রম সরবরাহকারী দেশ।
২০১৭ সালে পরিচালিত ওই সমীক্ষায় ভারতের অবস্থান শীর্ষ। যুক্তরাষ্ট্র তৃতীয় অবস্থানে।
বিশ্বের মোট অনলাইন কর্মীর ২৪ শতাংশ ভারতে। বাংলাদেশে আছে ১৬ ও যুক্তরাষ্ট্রে ১২ শতাংশ।
বাংলাদেশের বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং খাত ক্রমেই বিকশিত হচ্ছে। কর্মসংস্থান বাড়ছে। আসছে বৈদেশিক মুদ্রা। তবে স্নাতকধারীদের মধ্যে মানবসম্পদ ও ভাষা দক্ষতা কম থাকায় আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না।
মৌলিক যোগাযোগ দক্ষতা, স্পষ্টভাবে কথা বলার ক্ষমতা, গ্রাহকদের চাহিদা বুঝতে পারা ও সঠিকভাবে লেখার যোগ্যতাসম্পন্ন স্নাতকধারী খুঁজে পাওয়া কঠিন।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমানে দেশে দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের অভাব আছে।'
তবে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষিত বা আধাদক্ষ ব্যক্তিকে দক্ষ ফ্রিল্যান্সারে পরিণত করা সম্ভব।
বিশ্বব্যাপী আউটসোর্সিংয়ের বড় বাজার থাকায় দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও তরুণদের এই খাতের অংশ হওয়ার জন্য যোগ্য করে তুলতে শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন।
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ সারাবিশ্বে আউটসোর্সিং খাতে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বাজার আছে। বাংলাদেশ এখানে অবদান রাখতে পারে।
ওয়াহিদ শরীফ আরও বলেন, 'বৈশ্বিক আউটসোর্সিং বাজারে ভারতের অংশীদারিত্ব ইতোমধ্যে ১৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ফিলিপাইনের বার্ষিক আয় প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলার।'
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে এক বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য আঁকড়ে ধরে আছে।
গ্রামীণ দরিদ্রদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ৫২৯ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্পও আজ একনেকে তোলা হবে।
প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৮ হাজার ১০০ জনকে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ শেষে এক হাজার ৫৫০ জনকে অনুদান হিসেবে যন্ত্রপাতি দেওয়া হবে।
এ ছাড়া, আয়ের সুযোগ বাড়াতে প্রায় এক লাখ ৬২ হাজার গ্রামীণ নারীকে ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হবে।
প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ দেওয়া হবে। এটি বাস্তবায়ন করবে পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন। Source: bangla.thedailystar.net