ফুলবাড়িয়ার লাল চিনি হতে পারে রপ্তানি পণ্য
ফুলবাড়িয়ার লাল চিনির ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। প্রায় ২০০ বছর ধরে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আখ থেকে হাতে লাল চিনি তৈরি হচ্ছে। এবছর এ উপজেলায় প্রায় দেড়শো কোটি টাকার লাল চিনি উৎপাদন হবে আশা কৃষকদের। তারা বলছেন, সরকারি সহায়তা পেলে দেশের চিনির চাহিদা পূরণে ভাল ভূমিকা রাখতে পারে এ চিনি।
ফুলবাড়িয়া উপজেলার পলাশতলী গ্রামের আব্দুল মোতালেব। এক একর জমিতে চাষ করা আখ দিয়ে বানান লাল চিনি। কাঁচা রস জ্বাল দিয়ে ঘন করে, কাঠের হাতলযুক্ত যন্ত্র দিয়ে তৈরি করা হয় মিহি দানার চিনি।
এভাবে অগ্রহায়ণ থেকে চৈত্র মাস দিন-রাত চলে এই চিনি তৈরির ব্যস্ততা। হাতে তৈরি এই চিনিতে কোনো রাসায়নিক ব্যবহার হয় না।
আবদুল মোতালেবের আশা, এবার তার প্রায় ৬০ মন চিনি উৎপাদন হবে। তবে পরিশ্রম ও খরচ তুলনায় লাভ কম বলে দাবি তার।
আখ চাষি আবদুল মোতালেব বলেন, ‘যে দর আছে, সে দরে আমাদের পোষায় না। এখন মন বিক্রি হয় ৫ হাজার টাকা। এটা আমরা কাগজে বানাই। আর যেটা কড়াই দিয়ে বানায় সেটার দাম ৭ হাজার টাকা।’
রঘুনাথপুর, চাঁদপুরসহ কয়েক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ আখ চাষ ও চিনি উৎপাদনে জড়িত। এই শিল্পকে আরো এগিয়ে নিতে সরকারি প্রণোদনা চান তারা।
এক আখ চাষি বলেন, ‘আমরা আখ চাষ করি। যে টাকা আমরা খরচ করি, সেটা কখনই ওঠে না।’
দেশে কেবল ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়াতেই তৈরি হয় এই লাল চিনি । পিঠা, নাড়ু, মোয়া ও ক্ষীরের স্বাদ বহুগুণ বাড়াতে জুড়ি নেই এর।
ফুলবাড়িয়ার ৫৯০ হেক্টর জমির আখ থেকে, প্রায় সাত হাজার মেট্রিক টন লাল চিনি উৎপাদনের আশা করছে কৃষি অধিদপ্তর। যার দাম প্রায় দেড়শো কোটি টাকা। এই পণ্যের জিআই স্বীকৃতির জন্যেও নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ ।
ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছা. নাছরিন আক্তার বানু বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি যেন এটা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এর জন্য যে দপ্তরগুলোর সঙ্গে কথা বলা দরকার, আমরা চিন্তা করছি তাদের সঙ্গে কথা বলব।’
রাসায়নিকমুক্ত এ লাল চিনিতে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। উৎপাদন বাড়াতে পারলে, দেশে চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা হতে পারে এই পণ্য।সুত্রঃ www.itvbd.com