চবি ক্যাম্পাসে শীতের আমেজ

চবি ক্যাম্পাসে শীতের আমেজ

নাজমুস সাকিব হৃদয়: রৌদ্রের মিষ্ট তাপ, শিশির ঝরা রাত আর কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরবেলা চারিদিক,ধোঁয়ার মতন বাষ্পকণা উড্ডীন নদী ও পুকুরের জল হতে,পাতা ঝরা মরশুম যে কড়া নাড়ে দ্বারে আর জানান দিয়ে যায়;উদাসী সন্ন্যাসীর বেশে শীত এসেছে আজ প্রকৃতিকে রিক্ত করতে। ঠিক একইভাবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো ঘন কুয়শার চাদর জড়িয়ে চবিতে নেমে আসে শীতের মৃদু হাওয়া।


যান্ত্রিকতায় পিষ্ট নগর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অবস্থান। যেখানে প্রকৃতি ও পরিবেশটা পুরোপুরি গ্রামীণ আবহে তৈরি। চারিদিকে সবুজের সমারোহ, পাহাড়বেষ্ঠিত এই ক্যাম্পাসে শীতের প্রকোপটা একটু বেশিই। 


এই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা শীতকে উপভোগ করে নিজেদের মতো করে। বাহারি রকমের পিঠা আড্ডায় মেতে উঠে তারা। এই ঋতুতে শিক্ষার্থীদের আড্ডার কেন্দ্রস্থল থাকে শহীদ মিনার ও স্টেশন। বিভিন্ন রকম বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে দলে দলে গান আড্ডায় দেখা যায় তাদের। 


ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট থেকে শহীদ মিনার যেতে  কাটাপাহাড় রাস্তা ধরে হাঁটলে শীতের অনূভুতি বেশ ভালোভাবেই অনুভব করা যায়। চবি ক্যাম্পাসে তীব্র শীতের এই রিক্ত প্রকৃতি থামিয়ে রাখতে পারেনি শীতপ্রধান দেশ থেকে আসা অতিথি পাখিগুলোকে। এই পাখিগুলোর অভয়ারণ্য থাকে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের  উত্তর দিকসহ পাহাড়ের বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে। পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনে ঘুম ভাঙ্গে এই ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের। 


যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন সাকিব বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় চবিতে শীতের আমেজ একটু ভিন্ন রকম। কুয়াচ্ছান্ন কাঁক ডাকা ভোরে উষ্ণ পোশাকে নিজের শরীর মুড়িয়ে পাহাড়ি আঁকাবাকা রাস্তায় হাটলে স্বর্গীয় শান্তি অনুভূত হয়। সন্ধ্যায় নানারকম বাহারি পিঠার দোকানে ছেয়ে যায় ক্যাম্পাসের অলি-গলি। সব মিলে এ এক অন্যরকম অনুভূতি। 


লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহাতুন সাফিয়া ইতু দৈনিক ইনফো বাংলাকে জানান,  চারদিকে পাহাড় আর সবুজের সমারোহ আমাদের ক্যাম্পাস।  শীতে কুয়াশা তার বিশাল চাঁদর দিয়ে ঢেকে এক মায়াবী হাতছানির সৃষ্টি করে। কাঁকডাকা ভোরে ঘুম ঘুম চোখে উষ্ণ কাপড় জড়িয়ে ক্লাস করতে যাওয়াটা আমার কাছে বেশ উপভোগ্য। এছাড়াও রাতে বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে পাহাড়ঘেরা রাস্তা দিয়ে হাঁটা, টং এর  দোকানে বসে চা খাওয়া, দলবেঁধে বেসুরো ভাঙ্গা গলায় গান গাওয়া বিষয়গুলো উপভোগ করি। 


খুলনা থেকে ঘুরতে আসা সাগর মাহমুদ নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন,  বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আমার কাছে চবি সবার উপরে। দেশের দীর্ঘতম (আয়তনে) পাহাড়বেষ্ঠীত এই ক্যাম্পাস আমাকে মুগ্ধ করেছে। আর শীতের অনূভুতি টা ও বেশ ভালো। গরম কাপড় পরে দলে দলে গান করার ব্যাপারটি আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে।কাটা পাহার রাস্তায় হাটার অনুভূতি টাও অন্যরকম।