গণপিটুনিতে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের

গণপিটুনিতে মানুষ হত্যার প্রতিবাদ সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের

প্রেস রিলিজ:


গত ১৮ই সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও খাগড়াছড়িতে দেশের তিনটি ভিন্ন ঘটনায় তিনজনকে গণপিটুনি দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করার তীব্র প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানিয়েছে দেশ-বিদেশে থাকা একাডেমিকস ও পেশাজীবীদের নাগরিক সংগঠন সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ। এক বিবৃতিতে তারা বলে, 'বিভিন্ন পত্রিকা ও স্যোশাল মিডিয়ায় প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের বরাতে আমরা জানতে পেরেছি যে এই গণপিটুনির মত পৈশাচিক বিচার-বহির্ভূত হত্যাকান্ড চলার সময় এই ঘটনা প্রতিরোধ ও নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধানে  হল ও থানা প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়নি। এটি দুঃখজনকভাবে দেশে বিগত ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা চলমান থাকার নিদর্শন বহন করে, যা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। এছাড়াও গত ১৩ই সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের উপর্যুপরী হামলায় সেচ্ছাসেবক দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা নিহত হয়েছেন। আমরা প্রতিটি ঘটনার তদন্ত ও দ্রুত বিচারের মাধ্যমে খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।'



সি আই মনে করে, দেশজুড়ে চলা এই মবলিঞ্চিং ও মবভায়োলেন্সের দায় প্রশাসন কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না। এই মবভায়োলেন্সকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় নিরস্ত করতে প্রশাসনকে আরো কঠোর ও দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করতে হবে। এছাড়া গত পনেরো বছরের ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় চলা বিচারহীনতার সংস্কৃতি দুর করতে ও জনমানুষের মনে বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে বিচার বিভাগে জরুরীভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করার আহবান জানাচ্ছে সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ। প্রয়োজনে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে  মন্দির ও মাজারে হামলাসহ গণপিটুনির মত মবভায়োলেন্সের ঘটনাগুলোর ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি একজন অপরাধীরও আইনি সহায়তা ও ন্যায়বিচার পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। 



 বিবৃতিতে আরো বলা হয়, 'আমরা পত্র-পত্রিকা ও স্যোশাল মিডিয়া মারফত যা জেনেছি তার ফলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টার অধিকাংশ ঘটনার পিছনে অভ্যুত্থানে পরাজিত ফ্যাসিবাদী দল ও গোষ্ঠীর ইন্ধন ও প্রচেষ্টা বিদ্যমান। অতিস্বত্তর সারাদেশে গত ১৫ বছরে হত্যা, লুটপাট, চাঁদাবাজী ও গুমসহ নানা অপরাধে অভিযুক্ত ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছে সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ। আমরা মনে করি,  আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের নানা পর্যায়ের অসহযোগিতাও অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার ও রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। আমরা জনপ্রশাসনসহ রাষ্ট্রের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভ্যুত্থানের চেতনার সাথে একতাবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও সিআই মনে করে রাষ্ট্রের অতন্দ্র প্রহরী রাজনৈতিক দল ও জনগণের উচিত সতর্ক থেকে যেকোন উষ্কানিমূলক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে রাষ্ট্রকে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা যেখান থেকে সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনতে পারে।'