ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে বউ পেটানোর অভিযোগ
ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ এনেছেন তার স্ত্রী।
মঙ্গলবার (৪ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্ণারে সাংবাদিক সম্মেলনে তার স্ত্রী জয়া সাহা ও তার পরিবার এসব অভিযোগ এনে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি চেয়েছেন।
উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগও দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নির্যাতনের শিকার জয়া সাহা বিশবিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। সম্প্রতি তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। তিনি নাটোরের উপরবাজার উপজেলার রতন কুমার সাহার বড় কন্যা। এদিকে সঞ্জয় কুমার পাবনা জেলার চড়াডাঙ্গা গ্রামের সুশান্ত কুমার সাহার পুত্র।
২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে সঞ্জয় ও জয়ার বিয়ে হয়। বিয়েতে জয়ার বাবা উপহার হিসেবে ২৫ লক্ষ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় ফার্ণিচার দেন। তবে বিয়ের পর থেকেই তাদের উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মনোমালিন্য শুরু হয়। গত বছরের জুন মাসে স্ত্রীকে জোরপূর্বক শ্বশুরবাড়ি রেখে আসে সঞ্জয়। তারপর থেকে উভয়েই একবছর আলাদা থাকছেন। তাদের সংসারে সাড়ে চার বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
লিখিত অভিযোগে জয়া বলেন, 'বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই আমার স্বামী আমার উপর নির্যাতন শুরু করে। যার জন্য আজ আমার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আমি সেই লোভী, নীতিহীন ও দুঃশ্চরিত্র অমানুষ জ্ঞান পাপীর মুখোস সুশীল সমাজের সকলের কাছে উন্মোচন করতে চাই। আমি এই শিক্ষিত জ্ঞানপাপীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।'
জয়া অভিযোগে আরও বলেন, তিনি আমার সাড়ে চার বছরের একমাত্র শিশু পুত্রকেও নির্যাতন করতে ছাড়েনি। শিশুসন্তান পিতার আদর স্নেহতো পায়ইনি বরং আমার নির্যাতনের অংশীদারিত্ব পেয়েছে। এমনকি সন্তানের সামনেই আমাকে মানসিক-শারীরিকভাবে পাশবিক নির্যাতন করা হতো। এছাড়াও শিশু পুত্রকে গালমন্দ-মারধর করা, পায়ের স্যান্ডেল খুলে মারাসহ গায়ে গরম চা পর্যন্ত ছুঁড়ে নির্যাতন করা হয়।
জয়ার বাবা রতন কুমার সাহা বলেন, 'বিয়ের পর থেকে সঞ্জয় কুমার আমার মেয়েকে পাশবিক নির্যাতন করত। এক বছর আগে মেয়েকে আমার বাড়ি রেখে গেছে। এরপর আর যোগাযোগ করেনি। আমি একজন বাবা হিসেবে এই অন্যায়ের বিচার চাই।'
অভিযুক্ত শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, আমার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা। এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালের ৯ জুলাই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক ছাত্রীকে নির্যাতন ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে ওঠে।
অভিযোগের একবছর পর তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আশকারীর সভাপতিত্বে ২৪৪ তম সিন্ডিকেট সভায় তাকে ওই ছাত্রীর কোসের্র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কোর্সের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না বলে জানানো হয়।