আফ্রিকার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বললেন নিজের দেশের বাইরে তার একটিও বাড়ি নেই
আফ্রিকার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, নাইজেরিয়ার ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি আলিকো দাঙ্গোতে বলেছেন, নিজ দেশের বাইরে তার কোনো বাড়ি নেই। তার এ কথা শোনার পর অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।
দাঙ্গোতে বলেছেন, তার দুটি বাড়ি আছে—একটি নিজ শহর কানো-তে, আরেকটি লাগোস-এ। আর রাজধানী আবুজায় তিনি একটি ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকা অনুযায়ী আফ্রিকার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে নাম আসে দাঙ্গোতের। নাইজেরিয়ার অর্থনীতি ভীষণ সংকটের মধ্যে থাকলেও এ নিয়ে টানা ১৩ বছরের মতো তিনি আফ্রিকার শীর্ষ ধনীর স্থান ধরে রেখেছেন।
ফোর্বস জানিয়েছে, গত বছর তার সম্পদ বেড়েছে ৪০০ মিলিয়ন ডলার। ফলে এখন এই ধনকুবেরের নিট সম্পত্তির পরিমাণ ১৩.৯ বিলিয়ন ডলার।
সিমেন্ট ও চিনির ব্যবসায় বিপুল মুনাফা করেছেন ৬৬ বছর বয়সি এই ব্যবসায়ী। গত বছর নাইজেরিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র লাগোসে একটি তেল পরিশোধনাগার চালু করেছেন।
রোববার (১৪ জুলাই) দাঙ্গোতে পেট্রোলিয়াম রিফাইনারিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নিজের বাড়ি বিষয়ক এ তথ্য দেন তিনি।
ধনী অভিজাতরা নিয়মিতই রাজসিক জীবনযাপনের জন্য আলোচনায় থাকেন। তাই দাঙ্গোতের এ কথায় দেশটির অনেকেই অবাক হয়েছেন।
অনেক ধনী নাইজেরিয়ানের লন্ডন, দুবাই ও আটলান্টায় বাড়ি আছে।
দাঙ্গোতের মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ বলছেন, দুটির বেশি বাড়ি না রাখা বিচক্ষণ ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত; কারণ ভাড়া বাড়িতে থাকার খরচ কম।
আর দাঙ্গোতে একটি কারণেই বিদেশে বাড়ি কিনেননি—তিনি নাইজেরিয়াকে উন্নতি করতে দেখতে চান।
এই শিল্পপতি বলেন, 'লন্ডন বা আমেরিকায় আমার বাড়ি না থাকার একমাত্র কারণ হচ্ছে আমি নাইজেরিয়ায় শিল্পায়নের প্রতি মনোযোগ দিতে চেয়েছি।
'নাইজেরিয়া ড্রিম নিয়ে আমি প্রবল উৎসাহী। আর লাগোসের বাড়ি ছাড়া আমার আর একটাই বাড়ি আছে—আমার নিজ এলাকা কানোতে। আবুজায় একটা ভাড়া বাড়ি আছে।'
তিনি বলেন, 'আমার যদি আমেরিকাসহ দুনিয়াজুড়ে বাড়িঘর থাকে, তাহলে মনোযোগ দিয়ে নিজের মানুষের জন্য কিছু গড়তে পারব না।'
লাগোসের জনপ্রিয় ব্যানানা আইল্যান্ডে একটি বিলাসবহুল বাসভবন আছে দাঙ্গোতের। এ এলাকায় আরও অনেক ধনী নাইজেরিয়ানের বিলাসবহুল প্রাসাদোপম বাড়ি রয়েছে।
নিজের শহর কানোতে দাঙ্গোতের বাড়িটি বেশ সাদামাটা। বাড়িটি অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য ব্যবহার করা হয়।
পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বিশ্লেষক সানি বালা বলেন, দাঙ্গোতে খুব ভালো নজির স্থাপন করছেন।
'যখন টাকাটা অন্য জায়গায় দরকার, তখন ভূরি ভূরি ম্যানশনের মালিক হওয়াটা কোনো অর্জন হতে পারে না—এ কথাটা নাইজেরিয়ানদের বুঝতে হবে। দাঙ্গোতে বলেছেন, ১৯৯৬ সালে লন্ডনে নিজের বাড়ি বিক্রি করেছিলেন তিনি। আমি নিশ্চিত, ওই বাড়ি বিক্রির টাকা তিনি ব্যবসায় খাটিয়েছেন—এমনটাই হওয়া উচিত।'