ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে নাবিকের সেমিনার
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: সামাজিক আন্দোলন 'নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণ' (নাবিক) এর উদ্যোগে তরুণ পেশাজীবীদের সম্মানে ইফতার এবং "বৈশ্বিক সংকট: ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গা প্রেক্ষিত" শীর্ষক সেমিনার শনিবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাউথ এশিয়া ফাউন্ডেশন- বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের জেনারেল সেক্রেটারি, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, "আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানবাধিকারের লঙ্ঘনের ঘটনাবলীকে এড়িয়ে যাচ্ছি। ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গার মতো আঞ্চলিক সংকটের আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা বৈশ্বিক মানবাধিকারের মানদণ্ড (Standards of global human rights doctrines/ Discourses) এর প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশে দেশে জাতীগত সংঘাত ও জাতীসত্ত্বার অধিকারের প্রশ্নে নানা দেশে/ অঞ্চলে সংঘাত চলছে। যদিও জাতিসংঘের International Human Rights Declaration (1948) অনুযায়ী যে কোনো ভূখণ্ডের মানুষের রাজনৈতিক ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু বহু দেশে অগণিত মানুষ রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণের অধিকার থেকে বঞ্চিত। জাতীসংঘসহ বিভিন্ন পর্যায়ে মানবিক আবেদন উত্থাপনের পরও বস্তুত যতই দিন যাচ্ছে ততই আগ্রাসী হয়ে উঠছে হিংস্র রাষ্ট্রগুলো।"
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গা- উভয় ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রগুলোর এমন আচরণ দেখা যাচ্ছে। আমরা এরূপ আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
তারা বলেন, রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ শুরু থেকেই ফিলিস্তিনি মজলুম জনগণের পক্ষে ছিল। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সেপ্ট ইসরাইল’ শব্দযুগল বাদ দেয়া হয়েছে যা অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতি একধরনের মৌন স্বীকৃতির সামিল।"
বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে ইন্দো-প্যাসিফিকে বিশ্বমোড়লদের যুদ্ধাবস্থার মধ্যে ভূরাজনৈতিকভাবে রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশকে একটি নতুন সংকটের Crossroad এ এনে দাড় করিয়েছে জানিয়ে বক্তারা বলেন, "মানবিক কারণে এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু আরাকান রাজ্যের চলমান সংঘাত বাংলাদেশের জন্য Severe security concern হিসেবে হাজির হয়েছে |"
এছাড়াও বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গাদের নিজ ভূখন্ডে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থ বিবেচনায় অবিলম্বে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের নিকট দাবি জানানো হয় নাবিকের পক্ষ থেকে।
নাবিকের সভাপতি ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের চিফ এক্সিকিউটিভ এম জাকির হোসাইন খান ; আঙ্কারা ইলদিরিম বায়েজিদ ইউনিভার্সিটির তুরস্ক, এশিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিক স্টাডিজের প্রধান ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম; ঢাকা মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি ছাত্র ইব্রাহিম সেলিম মোহাম্মাদ কিসকু, রোহিঙ্গা একটিভিস্ট মোহাম্মাদ রিজওয়ান, লেখক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক সোহেল রানা। স্বাগত বক্তব্য দেন নাবিকের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হাসান।