আমি এই দেশের সন্তান, এই দেশেই থাকবো: ড. ইউনূস
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস ও সামাজিক ব্যবসা পরিচালনার আমন্ত্রণ থাকলেও তিনি কেন বাংলাদেশে থাকছেন সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীনের এমন প্রশ্নের জবাবে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূস বলেন, ‘‘তুমি কি বলছো আমি দেশ থেকে চলে যাই? এমন কুসন্তান হলাম আমি যে আমাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে? আমি এই দেশের সন্তান, এই দেশেই থাকবো৷''
সামাজিক ব্যবসা ও উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়ে ১২ থেকে ৩৫ বছরের জনগোষ্ঠীকে উৎসাহ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের জন্ম হয়েছে চাকুরি করার জন্য না৷ আমরা সবাই উদ্যোক্তা৷''
‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' অনুষ্ঠানে শুক্রবার দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ক্ষুদ্রঋণ, সামাজিক ব্যবসা, নিজের বিরুদ্ধে চলমান মামলাসহ নানা প্রসঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ইউনূস৷
গণতন্ত্র নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কেউ গণতন্ত্রের বিপক্ষে না, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, ন্যায়-নীতির পক্ষে৷ এগুলো না থাকলে তো জাতি হিসেবে আমরা টিকে থাকবো না৷''
তবে মুখ খুলে মানুষ গণতন্ত্রের কথা বলতে পারছে না বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় উনি মনে করেন, আমি দেশের সর্বোচ্চ ডাকু, সন্ত্রাসী কিংবা আমি অপরাধী, সেরা চোর৷ আমাকে বলেন আমি সুদখোর, ঘুষখোর৷''
কর ফাঁকি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘‘আমার টাকা, আমি রোজগার করি, আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি মালিক হবো না৷ যেহেতু আমি মালিক হবো না তাই আমি ট্রাস্টে দিয়ে দিতে চাচ্ছি৷ আমাদের আইনজীবী বলেছেন, আপনি যেহেতু দান করছেন, এটাতে আর কর দেবার কোন বিষয় নেই৷''
তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর দিতে বলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস কর পরিশোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন৷
প্রচলিত আইন অনুসারে প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের ৫ শতাংশ কর্মীদের দেয়ার বিষয়ে এই বিশ্বব্যক্তিত্ব বলেন, ‘‘যেখানে মালিক মুনাফা পায় না সেখানে শ্রমিক কিভাবে মুনাফা পাবেন? এই প্রতিষ্ঠানতো মুনাফা তৈরি করে না৷''
দেশের টাকা বিদেশে পাচারের ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় কী হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা৷ আইনটা প্রয়োগ করতে হবেতো৷ সমস্ত বিষয়টা আইনের ব্যাপার৷''
সাম্প্রতিক সময়ে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সংবাদ সম্মেলন করে তার প্রতিষ্ঠান জবর দখল হওয়ার কথা জানান৷ এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভয়ের মধ্যে আছি৷ আমাদের বিল্ডিংয়ের সামনে দলীয় লোকজন সভা করছে৷ আমরা খুবই সংকটময় অবস্থার মধ্যে আছি৷''
এসএইচ/এআই । Source: www.dw.com