ব্যায়ামের জন্য কত দ্রুত হাঁটা উচিত

ব্যায়ামের জন্য কত দ্রুত হাঁটা উচিত


ফিটনেস বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্যবিদেরা বলেন, আপনি যদি হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান, তবে প্রতিদিন হাঁটতে হবে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেম, মেটাবলিজম অর্থাৎ শারীরবৃত্তীয় বিপাকপ্রক্রিয়া, এমনকি মানসিক স্বাস্থ্য—সবকিছুই ভালো থাকতে পারে নিয়মিত ব্যায়াম হিসেবে হাঁটলে। তবে সে জন্য যথাসম্ভব দ্রুত হাঁটার কথাই বলা হয়ে থাকে। প্রতিদিন বা সপ্তাহে অন্তত চার দিন ব্যায়াম হিসেবে দ্রুত হাঁটা সুস্বাস্থ্য এনে দিতে পারে যেকোনো বয়সে।


বলা হচ্ছে, নিয়মিত হাঁটলে আয়ু বাড়ে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, সারা জীবন ধরে দ্রুত হাঁটলে ডিএনএতেও পরিবর্তন আসে, যার ফলে মধ্যবয়সে গিয়ে ১৬ বছর পর্যন্ত কম বয়সের শারীরিক বৈশিষ্ট্য দেখা যায় দেহে। এর চেয়ে আর ভালো কীই-বা হতে পারে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আসলে কত দ্রুত হাঁটতে হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন মানুষের জন্য উপযুক্ত হাঁটার গতি নির্ভর করে তাঁর বয়স ও ফিটনেসের মাত্রার ওপর।


সাম্প্রতিক গবেষণায় উদ্ভাবিত ‘বরগ পার্সিভড এক্সারশন স্কেল’ নামের একটি স্কেলকে এর জন্য অনেক বিশেষজ্ঞ সেরা হিসেবে মানছেন। নিজের সচলতা ও কায়িক পরিশ্রমের পরিমাণের বিষয়ে নিজেকে ৬ থেকে ২০-এর মধ্যে স্কোর দেওয়ার ব্যবস্থা আছে এতে। এখানে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাস আর পেশি ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ৬ স্কোর একেবারে কোনো পরিশ্রম নয় আর ২০ স্কোর সর্বোচ্চ কায়িক শ্রমকে নির্দেশ করে এই স্কেলে।

সে অনুযায়ী ১২ থেকে ১৪ স্কোর দ্রুত হাঁটার জন্য নির্ধারণ করা যায়। এ সময় জোরে জোরে শ্বাস নিতে হলেও টুকটাক কথা বলা যায়—এতটুকু জোরে হাঁটতে হবে। কায়িক শ্রমের পরিমাণটুকু এমন হবে, যেন শরীর একেবারে পরিশ্রান্ত না হয়ে পড়লেও চ্যালেঞ্জিং হয় তা। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি এভাবেই ব্যাখ্যা করেন।


বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পেশি ক্ষয় আর বুকে বাতাস ধরে রাখার ক্ষমতা হ্রাস পায় বলে হাঁটার গতি কমে যেতে পারে। গবেষণা বলে, প্রতিবছর প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ০.০০০৩৭ মিটার কমে আসে এই হাঁটার গতি। এর মানে হচ্ছে, ২০ বছর বয়সী সুস্থ একজন তরুণের চেয়ে ১ কিলোমিটার হাঁটতে ৬০ বছর বয়স্ক একজন ব্যক্তির ১ দশমিক ২ মিনিট বেশি লাগা উচিত। তবে ধীরে ধীরে এই গতি বাড়ানোর ব্যাপারে সব বয়সী ব্যক্তিরাই চেষ্টা করতে পারেন, যতটুকু শরীরে কুলায়। এ ক্ষেত্রে হাঁটার ভঙ্গিমাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাথা উঁচু করে, সামনে তাকিয়ে আর হাত সামনে–পেছনে স্বাভাবিকভাবে নাড়িয়ে হাঁটা উচিত। পিঠ সোজা রাখতে হবে, কাঁধ থাকবে শিথিল।


সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, হাঁটার গতির ব্যাপারে সাধারণ পরামর্শ হচ্ছে, ৫ মিনিট স্বাভাবিক গতিতে হাঁটা, তারপর ৩০ সেকেন্ড বেশ জোরে। এই প্যাটার্ন ৫ থেকে ১০ বার পুনরাবৃত্তি করতে হবে। এভাবে আস্তে আস্তে ৩০ সেকেন্ড থেকে বাড়াতে হবে দ্রুত হাঁটার সময়টুকু।